ভালোবাসার গল্প পড়ুন অনলাইনে
ঘড়িতে খুব বেশি হলে সন্ধ্যে ৬ টা,একটা লাশ কে ঘিরে রাস্তার ধারে মানুষের কোলাহল।
আশে পাশে অনেক মানুষের ভীড়।
তাদের মধ্যে থেকে কেউ বলছে,শালা পাগলটা শেষ পর্যন্ত মরেই গেল।
মনে হয় কাল রাতে একটু বেশিই নেশা করে ফেলছিল।
আরেকজন হঠাত বলে উঠলো,আরে ভাই শেষ পর্যন্ত পাগলটা আর মরার জায়গা খুজে পেল না?
শালা আমাদের এখানেই এসে মরলো।
এগুলো যে কোথা থেকে আসে,যাই হোক মানুষ এবার একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারবে,পাগল বিদায় হয়েছে।
এত কিছু কথার মাঝে হঠাৎ শোনা যাচ্ছে পুলিশের জিপ এর আওয়াজ।
ইন্সপেক্টর রনি জিপ থেকে নেমে লাশটার কাছে কিছুক্ষন পায়চারি করলেন।
এরপর লাশটা তুলে তার পকেট থেকে একটা মানিব্যাগ বের করলেন।
মানি ব্যাগটা তিনি জিপে রেখে কনস্টেবলদের লাশটা পোস্টমর্টাম এ পাঠাতে বলে উনি জিপে করে বাড়ি চলে গেলেন।
রনির স্ত্রী তখনও ঘুমিয়ে। রনি বেশ কয়েকবার নীলা কে ডাকলেন, কিন্তু কোন সাড়া শব্দ নেই।
কাল সারারাত রনি বাড়ি ফেরেনি এই লাশটার তদন্ত করতে গিয়ে,নিলাও হয়তো রনির ফেরার অপেক্ষা করতে করতে সারারাত পার করে ভোরে ঘুমিয়েছে।
তাই নিলাকে আর না ডেকে রনি তার কপালে একটা চুমু খেয়ে তারপর বাড়ি থেকে আবার বেড়িয়ে পড়লেন থানার উদ্দেশ্যে।
এরপর কেটে গিয়েছে টানা ৭ টা দিন।
একদিন ইন্সপেক্টর রনি তার জিপে করে বাড়ি ফিরছিলেন, হঠাৎ তার চোখ পড়লো সেই মানি ব্যাগ টার দিকে, যেটা সেদিন ওই লাশ টার পকেট থেকে পেয়েছিলেন। তিনি ওটা পকেটে করে নিয়ে বাড়ি ঢুকলেন।
একদিন ইন্সপেক্টর রনি তার জিপে করে বাড়ি ফিরছিলেন, হঠাৎ তার চোখ পড়লো সেই মানি ব্যাগ টার দিকে, যেটা সেদিন ওই লাশ টার পকেট থেকে পেয়েছিলেন। তিনি ওটা পকেটে করে নিয়ে বাড়ি ঢুকলেন।
মানিব্যাগটা রেখে দিলেন টেবিলের উপর। তার পর নিলাকে ডেকে বললেন - এই একটু কড়া করে চা আনতো, তোমার হাতের চা না খেলে আমার দিনটাই ভাল যায়না।
-থাক,আর বলতে হবে না। আমি এক্ষুনি যাচ্ছি।
কিছুক্ষন পর রনি মানি ব্যাগটা খুললেন। ব্যাগের মধ্যে একটা চিঠি আর একটা আংটি দেখতে পেলেন। আংটি টা পাশে রেখে তিনি চিঠিটা পড়া শুরু করলেন।
প্রিয় নিলা,
চাইলেও তোমাকে ভুলে থাকতে পারিনি। তোমাকে অনেক খুজেছি। কিন্তু কোথাও পাইনি। শুনেছিলাম তোমার বিয়ে হয়ে গেছে। তারপরও তোমাকে খুঁজেছি কারন শাড়িতে তোমাকে কেমন লাগে তা একটা বার দেখবো বলে,জানো তো এই ইচ্ছাটা আমার অনেকদিনের ছিল। বিশ্বাস করো এখন আর তোমাকে নতুন করে পাবার ইচ্ছা নেই। তোমার ভালবাসার ভাগও আর নেব না। জানো নিলা ওরা না আমাকে পাগল বলে আমাকে খুব মারধর করে,আমায় রাস্তার ইট ছুড়ে মারে,আমার না খুব কষ্ট হয়। আমাকে না এখন আর কেউ ঠিকমত খেতেও দেয় না। খিদের জ্বালায় আমি না মাঝে মাঝে ডাস্টবিন এর পচে যাওয়া খাবারগুলো কুড়িয়ে খাই। আমাকে দেখলে না লোকে হাসাহাসি করে। আমার কিন্তু এতে একটুও দুঃখ লাগে না। জানো নিলা মনে হচ্ছে আমি আর বেশি দিন বাঁচবো না,তাই চিঠিটা লিখেছি। আমার ছেঁড়া চিঠিটা যদি কোনদিন তোমার কাছে পৌছায়, তাহলে একটা বার আমার কথা মনে করে আমার কবরে একমুঠো মাটি দিয়ে যেও। যাতে তোমার হাতের স্পর্শ নিয়ে শুয়ে থাকতে পারি।
ইতি-
পথহারা এক পাগল।
রনির চোঁখ দুটো জলে ভরে উঠেছে, ঘন ঘন চোখের পাতা পড়ছে, এমন সময় হঠাৎ মনে পরে গেল আজ থেকে তিন বছর আগের কথা।
মনে পড়ে গেল সেদিনের শ্যাম নামের সেই ছেলেটার কথা।
নিলা আর শ্যাম দুজন দুজনকে খুব ভালবাসতো।
ওরা দুজনে মিলে জীবনের নানা রঙের স্বপ্ন দেখেছিল।
কিন্তু ওদের সেই স্বপ্ন পুরনের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল নিলার পরিবার।
যেহেতু শ্যাম ছিল নিলার বিপরীত ধর্মের ছেলে।
সেদিন রনি নিলার পরিবারের কথা মত অতি কৌশলে শ্যামের কাছ থেকে আলাদা করেছিল নিলাকে।
নিলার বাবার কথা মত আর নিলাকে পাওয়ার জন্য রনি শ্যামকে মিথ্যা মামলায় জেলে আটকে রেখে নিলাকে বলেছিল শ্যাম সাগরে ডুবে মারা গেছে।
তারপর রনি নিলাকে বিয়ে করে অনেক দূরে চলে আসে।
আজ এইসময়ে এসে বুঝতে পারছে কি ভুলই না সে করেছিল সেদিন।
হঠাৎ,
চা নিয়ে নিলার আগমন।
চা নিয়ে নিলার আগমন।
চোখে ভেসে আসে সেই আংটি টা। যেটা শ্যামকে গিফট করেছিল নিলা তার জন্মদিনে। চিত্কার করে ওঠে নিলা, কোথায় পেলে তুমি এই আংটি টা? আমার শ্যাম কোথায়? বলোনা আমার শ্যাম কোথায়? আমাকে ওর কাছে নিয়ে চলো।
রনি তার জিপে করে নিয়ে যাচ্ছে নিলাকে তার শ্যামের কাছে।
একটা কবরস্থানে তার জিপটা এসে থামল।
নিলা জিপ থেকে নেমে পাগলের মত তার শ্যামকে খুঁজতে লাগল।
ঠিক তখনই নিলার চোখে ভেসে আসল একটা নতুন কবর।
তাতে সুন্দর করে একটা নাম লেখা "শ্যাম"।
সমাপ্ত
আশুতোষ নামের ফেসবুকের একটা বন্ধু
আমাকে এই গল্পটি ম্যাসেজ করে পাঠিয়েছিল।
আমি শুধুমাত্র কিছু বানান, দু চার যায়গায় একটু সংশোধন ও একটা নাম পাল্টে এখানে পোস্ট করে দিয়েছি।
আশা করি সকলের এটা ভালো লেগেছে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন