আপনি নিজেও জানেন ও মানেন সব মেয়ে যেমন খারাপ বা হৃদয়হীনা হয় না, তেমন সব ছেলেরাও কিন্তু ধোয়া তুলশীপাতা নয়। অনেক ছেলেই কিন্তু চরম খারাপ।
আমি নিজেই একজন।
আমি হয়ত কারোর সাথে সেক্স করে ভিডিও ইন্টারনেটে দিতে পারব না, অতোটা খারাপ না।
কিন্তু অনেক ছেলেই যে এটা করছে তাতো প্রতিদিনই দেখছি।
ছেলেটা খুব ব্যাস্ত বিয়ের কেনাকাটা নিয়ে।
মেয়েটার কোন ব্যস্ততা নেই। সে আকাশের দিকে তাকিয়ে মেঘ দ্যাখে, বৃষ্টি হলে দুহাত প্রসারিত করে বৃষ্টি ধরে। তারপর সেই বৃষ্টিস্নাত হাতটা মুখে মাখে, নদীর ধারে যায়, নদী দ্যাখে।
ছেলেটা মহাব্যস্ত জেনেও মেয়েটা ফোন করে।
ফোন করে ভাবে, ব্যস্ত ছেলেটা কী ফোন ধরবে? ওমা! ধরলোতো।
রিসিভ করলে মেয়েটা বলল, একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে।
- কী কথা?
- কী করছো?
- বিয়ের কেনাকাটা।
- শাড়ি?
- শাড়ি, সাথে আরও সব।
- কার?
- কার আবার! ঘরে যে নতুন আসবে তার।
- আর?
- উফ! বললামতো সব।
- বিরক্ত হচ্ছো?
- না।
- উফ! বললে কেন?
- উফ! ঠিক আছে আর বলবোনা। তোমার গুরুত্বপূর্ণ কথাটা বলো।
- আমি জানি বিয়েটা মেয়েটার বাড়িতে হচ্ছেনা।
- তো? কোথায় হচ্ছে জানতে চাও?
- না না। খবরদার আমাকে বলবেনা।
- কেন?
- আমি যদি বিয়ের সময় হাজির হয়ে যাই! যদি ওখানে গিয়ে পাগলামী করি? যদি তোমাকে নিয়ে টানাহ্যাঁচড়া করি?
- তুমি করবেনা আমি জানি।
- না না। আমিতো পাগলি। পাগলিরা কখন কী করে তা তারা নিজেরাও জানেনা।
- এটাই তোমার গুরুত্বপূর্ণ কথা?
- না।
- তো?
- আজকের পর আমি যদি তোমাকে ফোন করি তাহলে তুমি রিসিভ করবেনা।
- আচ্ছা।
- শোনোনা, আমি কিন্তু বারবার ফোন করব। আমার নিজের ভেতর কোন কন্ট্রোল থাকবেনা। কিন্তু তুমি ফোন রিসিভ করবেনা। আমি কিন্তু শত শত ম্যাসেজ করবো, তুমি ম্যাসেজগুলো ওপেন করবেনা। কারন ম্যাসেজ পড়ে তুমি ইমোশনাল হয়ে যেতে পারো। তোমার মন খারাপ হয়ে যেতে পারে।
- গুরুত্বপূর্ণ কথা শেষ?
- না। আরো আছে।
- বলো।
- বিয়ের আগের দিন তুমি সিম চেইঞ্জ করে নিও, ঠিক আছে?
- কেন?
- আমারতো মাথা ঠিক থাকবেনা। আমি বারবার ফোন করবো। এরচেয়ে তোমার নাম্বার বন্ধ পেলে সেটাই ভাল। আর হ্যাঁ আমি বারবার ফোন করাতে যদি তোমাকে কেউ জিজ্ঞেস করে কে ফোন করছে, তুমি বলবা আননোন নাম্বার, বখাটে ছেলে ডিস্টার্ব করছে।
- হু।
- আর শোনোনো।
- বলো।
- তুমি নাম্বার চেঞ্জ করলেও কিন্তু আমি নাম্বার খোঁজার চেষ্টা করবো। তোমার যে বন্ধুদের আমি চিনি তাদের কাছে তোমার নতুন নাম্বার দিওনা। আর দিলে ওদের বলে দিও ওরা যেন আমাকে তোমার কোন ইনফরমেশন না দেয়।
- হু।
- আর একটা কথা। কেউ কেউ তোমার কাছে বলতে পারে আমি ভালো নেই বা অসুস্থ হয়ে গেছি। তুমি কিন্তু এটা ভেবে মন খারাপ করবেনা। আমি কিন্তু ভালোই থাকবো। আর অসুস্থ বা মন খারাপ হলেইবা কী! বাবা-মা মরে গেলেও তো মানুষ বেশিদিন খারাপ থাকেনা, তাইনা? আমি হয়তো কয়েকদিন মুখ ভার করে থেকে তারপর দিব্যি সুস্থ হয়ে যাবো। তুমি একদম চিন্তা করবেনা। ঠিক আছে?
মেয়েটা আর কথা বলতে পারেনা। সে ফোন কেটে দেয়। তার দু-চোখ বেয়ে অঝোরে জল পড়তে থাকে।
মেয়েটা আবার ফোন করে।
ছেলেটা রিসিভ করেনা।
মেয়েটা আবারো ফোন করে।
ছেলেটা কস্ট পায় কিন্তু রিসিভ করেনা।
মেয়েটা ম্যাসেজ পাঠাই, প্লিজ, একবার রিসিভ করো, প্লিজ...।
ছেলেটা ম্যাসেজ খোলার সাহস পায়না। সে জানে ঐ ম্যাসেজের মধ্যে কী লেখা আছে!
মেয়েটা আবার ফোন করে।
ছেলেটা ফোন কেটে দিয়ে ফোনটা অফ করে।
শপিংয়ের তালিকায় যুক্ত করে, নতুন সিম!।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন