বেঁচে থাকাটাই আসল "চ্যালেঞ্জ
এই তো .. হোলির আগের দিন, পাশের পাড়া, ক্লাস এইটের ছেলে, স্কুল থেকে হোলি খেলে ফেরায় মা বকাবকি করল, গায়ে হাত তুলল, ব্যস!ওইটুকু ছেলে আত্মহত্যা করল, কাল খবরে পেলাম হাওড়ায় মা ফেসবুক করতে বারন করায় আত্মঘাতী মাধ্যমিকের ছাত্রী।
বিগত ১ মাসে নাকি দিনহাটায় ৭-৮টি আত্মহত্যা হয়েছে,
সব ছেলে-মেয়ের বয়েস নাকি ১৪-১৭ ... !
প্রতিনিয়ত পেপার ঘাটলে হয়তো প্রতিদিনই এরকম কিছু চোখে পড়ে।
ভাবছেন ব্লু-হোয়েল ?
না তার থেকেও ভয়ানক গেম "প্রেম-গেম"
জীবনের প্রথম বিশ্বাসঘাতকতা বা প্রতারণা হয়তো নিতে পারছে না সদ্য বেড়ে ওঠা Teenager গুলি ..।
জীবন কি এতই সস্তা?
কিন্তু এর থেকে কিছু ব্যাপার উঠে আসছে অবশ্যই যেটা নতুন Generation এর ছেলেমেয়েদের অবশ্যই মাথায় রাখা উচিত, শেখাও উচিত ।
১. প্রথমত আগে তোরা নিজেকে ভালোবাসতে শেখ, নিজেকে ভালোবাসতে না পারলে অন্যকে কিভাবে ভালোবাসবি?
২. "তোমায় ছাড়া বাঁচবো না" এই চিন্তাধারা মাথা থেকে বের করতে হবে, হ্যাঁ!
কাছের কেউ ছেড়ে গেলে কষ্ট হয়, তার সাথে কাটানো স্মৃতিগুলো বুকে জাকিয়ে বসে, কিন্তু আত্মহত্যা এর সমাধান নয়।
আত্মহত্যা কখনোই কোন কিছুর সমাধান হতে পারেনা, আর জীবনের থেকে মূল্যবান এই নশ্বর পৃথিবীতে কিচ্ছু নেই.. কিচ্ছু না.. ।
সময় সবকিছু বদলে দেয়, ঘা শুকিয়ে দেয়, নিজেকে একটু সময় দে, অপেক্ষা কর, দেখবি জীবনকে আবার ভালোবাসতে শুরু করেছিস। এটা মনে রাখিস, যারা সত্যিকারের ভালোবাসে, তারা কখনো ছেড়ে যায়না, তাহলে ভেবে দেখ যে ছেড়ে গেল, ভালোইবাসলো না তার জন্যে জীবনটাই দিয়ে দিবি?
যারা সত্যিকারের ভালোবাসে ( যেমন মা-বাবা-ভাই-বোন) তাদের জন্যে বাঁচতে পারবি না?
৩. প্রেম-ভালোবাসা আজকাল খোলামকুচির মতো, ঠুনকো, দুদিনের প্রেমিক/প্রেমিকার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য আত্মহত্যা করলি ..আর যারা তোকে জন্ম দিল, যত্নে-আদরে-স্নেহে-ভালোবাসায় এত বড় করে তুলল, সেই মা-বাবার ভালোবাসার কি দাম দিলি?
তাদের ভালোবাসা কিন্তু ঠুনকো নয়, বুকের রক্ত জল করে , কষ্ট করে, তোর অভাব-অনটন মিটিয়ে তোকে বড় করে তুলেছিল, তাদের কথা কি একবারও মাথায় এলো না?
তোদের শুধুমাত্র তোদের প্রেমিক-প্রেমিকারা ভালোবাসেনা, তোদের কাছের মানুষ, মা-বাবা-ভাই-বোন..তারাও ভালোবাসে, তাদের কথাও একটু ভাবিস ।
৪. বয়সটা খুব ভয়ংকর, ১৩-১৯ .. সামান্য কিছু হলেই আমরা অন্ধকার দেখি, ভেঙে পড়ি, এই বয়সে অভিজ্ঞতা ও জীবনবোধের অভাব ঘটে প্রচন্ড, সহজেই ব্রেন ওয়াশ করা সম্ভব, ব্লু-হোয়েলে আত্মঘাতী ৯৫% শতাংশ ছেলে-মেয়ের বয়েস ১০-১৯।
তাই এই বয়সের আমার সকল ভাই-বোনদের উদ্দেশ্যে বলছি, তোর সাথে কোন কিছু খারাপ ঘটলে মা-বাবা, দাদা, দিদি, ভাই, বোন..বা খুব ভালো বন্ধু তার সাথে শেয়ার কর, নিজে কোন বড় পদক্ষেপ নিস না...। একটা উপায়, একটা সাজেশন, একটা মতামত জীবন বদলানোর ক্ষমতা রাখে ।
জীবন একটাই, জীবনের থেকে মূল্যবান কিছু নেই, সেটা সবসময় মাথায় রাখিস ।
৫. গুরুজনদের বলছি, এই বয়েসটা খুব সেন্সিটিভ, বাড়ির লোকের একটু নজরদারি , একটু শাসনে রাখা উচিত ছেলে-মেয়েদের, যা বর্তমান প্রজন্মে ক্রমশ হ্রাসমান, এই বয়েসটি শেখার বয়েস, অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের বয়েস, যে কোন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার শিক্ষা দরকার, ছেলে-মেয়ের সাথে ফ্রেন্ডলি মিশুন, আর তাদের শিক্ষাও দিন, একটু শাসনে রাখুন, নইলে ভবিষ্যৎ খুব মারাত্মক হতে চলছে (উদাহরণ ব্লু-হোয়েল) ।
.
.
.
শুধু এটুকুই বলার আত্মহত্যা কখনোই কোন সমাধান হতে পারে না, জীবনে খারাপ সময় চলছে?
খুব খারাপ সময়?
সেই খারাপ সময়কে "সময়" দে, ঠিক কেটে যাবে .. এভাবে মা-বাবার চোখের জলের কারন হয়ে দাঁড়াস না, তারা এসব দেখার জন্যে তাদের বুকের রক্ত জল করে তোদের বড় করে তোলে না.. একটু অপেক্ষা কর, আবার নতুন সকাল আসবে ..😊
কখনো শুনেছিস যে ২৪-২৫ বছরের যুবক যুবতী ব্লু-হোয়েলে আত্মঘাতী হয়েছে? ৯৫% আত্মঘাতীর বয়েস ১১-১৯ .. তাই একটু অপেক্ষা, একটু ধৈর্য, এক সময় দে নিজেকে, এখানে মৃত্যু নয়, বেঁচে থাকাটাই আসল "চ্যালেঞ্জ" ।
ভালো থাকিস তোরা! 😊
~ অপূর্ব ©
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন